SAIFSAMIR.COM

৯/১১ হামলার জন্য আসলে কারা দায়ী? ৯/১১ নিয়ে এখনও অনেক সন্দেহ...

11/9/2013

0 Comments

 
Who is responsible for the 9/11 attacks?
Who is responsible for the 9/11 attacks?
ইউএস অফিসিয়াল ভাষ্যমতে, ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখ হাইজ্যাকাররা চারটি প্যাসেঞ্জার এয়ারক্রাফটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বিমানগুলোর দুটি নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ওপর ক্র্যাশ করে। ফলে টুইন টাওয়ার ধ্বসে পড়ে। সেই সাথে সংলগ্ন দুটি বিল্ডিংও ধ্বসে পড়ে। অন্যদিকে তৃতীয় প্লেনটি পেন্টাগনের ওপর আঘাত করে, এবং চতুর্থ প্লেনটি পেনসিলভ্যানিয়ার একটি মাঠে ক্র্যাশ করে।

২০০২ সালে আমেরিকা সরকার এই ঘটনার তদন্তে 'নাইন/ইলেভেন কমিশন' গঠন করে। কমিশন তার রিপোর্ট ২০০৪ সালে প্রকাশ করে। রিপোর্টে বলা হয় ১৯ হাইজ্যাকারদের সবাই ছিল আল-কায়েদার সদস্য। এতে যুক্তরাষ্ট্রের স্পাই এজেন্সি সিআইএ (CIA) ও এফবিআইয়ের (FBI) গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ করা হয়।

এতো গেল ৯/১১ নিয়ে আমেরিকার অফিসিয়াল ভাষ্য। কিন্তু পৃথিবীর সাধারণ মানুষরা কি ভাবছেন?

নাইন/ইলেভেনের হামলাগুলোর ফলে ২,৯০০-এর বেশি মানুষ মারা যায়, এবং এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার তথাকথিত 'ওয়ার অন টেরর' বা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়। এই হামলার জন্য অফিসিয়ালি দায়ী করা হয় আল-কায়েদাকে। কিন্তু অনেকেই এই অফিসিয়াল ভাষ্যটিকে মানেন না।

২০০৮ সালে ওয়ার্ল্ড পাবলিক ওপিনিয়ন ডট অর্গের প্রকাশিত জরিপে দেখা যায়, পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি মানুষ এই অফিসিয়াল বক্তব্যটি প্রত্যাহার করেছেন। নির্ভরযোগ্য এই জরিপ সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী ১৬,০০০ মানুষকে প্রশ্ন করেছিল "নাইন-ইলেভেন হামলার পেছনে কে বা কারা রয়েছে বলে আপনার ধারণা?"।

মাত্র ৪৬ শতাংশ আল-কায়েদাকে দায়ী মনে করেন, ২৫ শতাংশ বলেন তারা জানেন না এবং ১৫ শতাংশ বলেন, এই হামলার পেছনে আমেরিকারই হাত রয়েছে।

এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, আমেরিকার প্রতি, আমেরিকার বক্তব্যের প্রতি মানুষের আস্থার অভাব কতোটা প্রকট।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের উল্লেখযোগ্য যেমন এটা বিশ্বাস করেন– নাইন-ইলেভেন হামলার পেছনে কোন না কোনভাবে আমেরিকা সরকার জড়িত আছে– তেমনি ৭ শতাংশ মানুষ তাদের সন্দেহের আঙ্গুল ইসরাইলের দিকে তাক করেন।

জরিপকৃত দেশগুলোর মধ্যে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বিবেচনায় মিশর (৪৩%) ও জর্ডানবাসীরা (৩১%) সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন যে এই হামলার পেছনে ইসরাইল রয়েছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন থেকে যারা জরিপে অংশ নিয়েছিলেন তাদের নব্বই শতাংশ দাবী করেন, ইসরাইল কোন না কোনভাবে এই হামলার জন্য দায়ী।

বিশ্বের সবচেয়ে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৭ শতাংশ বলেন– তারা জানেন না ৯/১১ হামলার পেছনে কারা ছিল। তবে ৫ শতাংশ বলেন ইসরাইল জড়িত ছিল।

আলোচিত এই জরিপে আরও অনেক কন্সপিরেসি থিওরিও উঠে এসেছিল। যেমন: ইউএস মিলিটারির লোকেরাই এই হামলাতে ছিল। অথবা, আমেরিকা সরকার আগে থেকেই হামলা সম্পর্কে জেনেও নিশ্চুপ ছিল। অথবা, তারা এটা নিজেরাই আল-কায়েদাকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছিল।

'আমেরিকান ফ্রি প্রেস' পত্রিকার সম্পাদক উইলিস কার্টো বরাবরই তার তর্জনী ইসরাইলের দিকে নির্দেশ করেছেন। তিনি বলেন, আমেরিকান সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে ইসরাইলের মোসাদ (গোয়েন্দা সংস্থা) এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমেরিকার অফিসিয়াল ভাষ্যটির কোন প্রকৃত প্রমাণ নেই। তিনি এই 'অফিসিয়াল গল্পটিকে' বিশ্বাস করার মতো নয় বলে মন্তব্য করেন। তার ভাষায়, "It's impossible to believe that a few furtive little characters armed with box cutters who had no idea how to fly ... could have manouvred the planes like this"।

আজ ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩। নাইন-ইলেভেন হামলার এক যুগপূর্তিতেও এই বিতর্ক এখনও থামছে না যে ৯/১১ হামলার জন্য আসলে কারা দায়ী। আমেরিকার অফিসিয়াল গল্পটিতে খানাখন্দের পরিমাণ এতোই বেশি যে সবল মস্তিষ্কের কেউ এটি সহজে বিশ্বাস করতে পারেন না। বিতর্ক উঠে আসে।

প্রিয় পাঠক, লক্ষ্য করে দেখুন, এই হামলার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারা? মুসলিমরা। সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে কে? আমেরিকা।

এই হামলার ছুতো ধরে আমেরিকা একের পর এক মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোতে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমানরা নিগৃহীত হচ্ছে আমেরিকার মাটিতে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেশে। এর জন্য যেমন আল-কায়েদা, তালেবানদের মতো ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো দায়ী তেমনি তথাকথিত ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর মেরুদণ্ডহীনতা ও অবুদ্ধিজনিত পররাষ্ট্রনীতিও দায়ী।

আর হ্যাঁ, এটাও সত্য যে, আমেরিকা যা করতে চায় তা করার জন্য প্লট-পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি করতে তাদের কোন জুড়ি নেই।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে- বলা ভালো, পারমাণবিক শক্তি অর্জনের পর থেকে আমেরিকার প্রধান পররাষ্ট্রনীতি হলো, বাকি বিশ্বকে তাদের পায়ের নিচে দমিয়ে রাখা। এই লক্ষ্য অর্জনে হেন কোন কাজ নেই যা তারা করবে না। তারা তো সরাসরিই বুক চাপড়ে বলে, বিশ্বকে তারা নেতৃত্ব দিতে চায়। 'এই দায়িত্ব তাদেরকে কে দিয়েছে?' - এই প্রশ্নটি করার সাহস রাখে না বেশিরভাগ রাষ্ট্র। মূলত, আমেরিকাকে কেউ চটকাতে চায় না। যারা তাও বা আমেরিকার বিপক্ষে গলা উঁচু করে- তাদের অধিকাংশের গলাই ফাঁপা। সমস্যা হলো, যারা আমেরিকার বিপক্ষে দাঁড়াতে চায় তারা একত্রিত হতে জানে না।

আমেরিকার এই লাগাম ছাড়া হ্রেষা, পরের দেশের মাটিতে - মানুষের বুকে খুড়ের আঘাত কি কখনওই থামবার নয়? কোন শিখাই চিরন্তন না। যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কখনও সূর্য অস্ত যেত না, সেই রাজ্যের সূর্যশিখা একদিন অস্তমিত হয়েছে। কিন্তু এটা একদিনে হয়নি। আমেরিকার দর্প বাতিও একদিন নিভবে না, কিন্তু... কিন্তু সেজন্যে হয়তো একটি যুদ্ধের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে হবে। অপেক্ষায় থাকতে হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য।

যে করুণ যুদ্ধ আমরা কেউই কামনা করি না।

কিন্তু আমেরিকার চরম যুদ্ধবাজনীতি একদিন সারা বিশ্বকে সেই যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবে।

SaifSamir.com থেকে আরও: কিভাবে খুব সহজে যে কোন তর্কে জিতবেন? আমার রহস্য বলে দেয়া হলো!
0 Comments



Leave a Reply.

    আর্টিকেল

    লেখক

    সাইফ সামির

Powered by Create your own unique website with customizable templates.